হরেকৃষ্ণ, নিজে একাদশী মহাব্রত পালন করুন এবং অন্যকে একাদশী মহাব্রত পালন করতে উৎসাহিত করুন। নোটিশঃএকাদশী২৪” সনাতন  ধর্মীয় বিষয়ক একটি মুক্তকোষ।এখানে সনাতন  ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয় সংরক্ষণ করে রাখা হয়।আপনিও আপনার চারপাশের সনাতন  ধর্মীয় যেকোন বিষয় লিখে পাঠিয়ে দিন সম্পাদক বরাবর।আপনিও হয়ে যান একাদশী২৪’ ত্রর একজন গর্বিত সংগ্রাহক।মেইলঃ ekadashi24team@gmail.com।শুভকামনা সাইটটি ভিজিট করার জন্য।

শ্রীল পুন্ডরীক বিদ্যানিধি ঠাকুর

শ্রীল পুন্ডরীক বিদ্যানিধি ঠাকুর ?
বৃষভানু মহারাজ তয়াখ্যাতঃ পুরা যে ব্রজমণ্ডলে। অধুনা পুণ্ডরীকাক্ষো বিদ্যানিধি মহাশয়ঃ অর্থাৎ-ব্রজে যিনি বৃষভানু মহারাজ রূপে বিখ্যাত ছিলেন, তিনিই পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি মহাশয় রূপে আবির্ভূত হয়েছিলেন। প্রসিদ্ধ প্রাণকৃষ্ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের তৃতীয় পুত্র যিনি বরেন্দ্র রাজের রাজ পণ্ডিতরূপে কর্মরত ছিলেন, তিনিই বিদ্যানিধির পিতা বাণেশ্বর পণ্ডিত(মতান্তরে শুক্লাম্বর) এবং মাতা হচ্ছেন পরম ধর্মানুরাগী পতিব্রতা গঙ্গাদেবী। চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানার মেখলা গ্রামে আনুমানিক ১৪৮৫ সালে মাঘ মাসে শ্রীপঞ্চমীর পবিত্র তিথিতে মহিয়ষী গঙ্গাদেবী এক তেজোদীপ্ত দিব্য পুত্র সন্তান প্রসব করেন। পুত্রের নাম রাখা হলো পুণ্ডরীক। শ্রীল বৃন্দাবন দাস ঠাকুর চৈতন্য ভাগবতে বর্ণনা করেছেনঃ চাঁটিগ্রামে জন্ম বিপ্র পরম পণ্ডিত। পরম-স্বধর্ম সর্বলোক অপেক্ষিত।। কৃষ্ণভক্তি সিন্ধু মাঝে ভাসে নিরন্তর। অশ্র-কম্প-পুলক বেষ্টিত কলেবর।। গঙ্গাস্নান না করেন পাদস্পর্শ ভয়ে। গঙ্গা দরশন করে নিশার সময়ে।। (চৈ. ভা. মধ্য-৭/২৩-২৫)
শ্রীমন্মহাপ্রভু তাঁর এহেন ভক্তি দর্শন করে, তাঁকে কখনো পুণ্ডরীক বিদ্যানিধি, কখনো গুণনিধি, কখনো বা প্রেমনিধি নামে সম্ভাষণ করতেন। শ্রীল পুন্ডরীক বিদ্যানিধি মহাশয় কৃষ্ণলীলায় ছিলেন শ্রীমতী রাধারাণীর পিতা। শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর লীলায় রাধারাণী গদাধর পন্ডিত রূপে অবতীর্ণ হন। আর তাই পুন্ডরীক বিদ্যানিধি ও গদাধর পন্ডিতের মধ্যে এক বিশেষ সম্পর্ক ছিল। যখন শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভু নবদ্বীপে লীলাবিলাস করছিলেন, পুন্ডরীক বিদ্যানিধি চট্টগ্রাম থেকে সেখানে যান। এমনকি নবদ্বীপে তাঁর আগমনের পূর্বেও মহাপ্রভু পুন্ডরীক বিদ্যানিধির উদ্দেশ্যে ক্রন্দন করে বলতেন “পুন্ডরীক, হে আমার বাপ! কবে তোমার আমি কাঙ্খিত দর্শন লাভ করব। আমি যে তোমার বিরহে ব্যকুল হয়ে আছি!” মহাপ্রভুর সেই আর্তি শ্রবণ করে ভক্তরা আন্দাজ করলো যে হয়তো তিনি কৃষ্ণকে সম্বোধন করে পুন্ডরীক বলে ডাকছেন। মহাপ্রভুর বাহ্যজ্ঞান ফিরলে কেউ গিয়ে তাঁকে জিজ্ঞেস করলো তিনি কেন এভাবে কাঁদছিলেন, মহাপ্রভু তখন রহস্য উদ্ঘাটন করলেন “তোমরা সকলে অত্যন্ত ভাগ্যবান কারণ তোমরা বিদ্যানিধির মহিমা শ্রবণ করতে ইচ্ছুক। অত্যন্ত আশ্চর্য ও রোমহর্ষক সে কথা। তাঁর জীবন চরিত্র শ্রবণে কৃষ্ণপ্রেম লাভ হয়। তাঁর নাম ও মহিমা শ্রবণে চতুর্দশ ভুবন সমেত এই বিশ্বচরাচর পবিত্র হয়। তিনি বাহ্যত দর্শনে বিষয়ীর মত বেশ ভূষণ ধারন করেছেন আর তাই তিনি যে মহা ভাগবত্ তা কেউ বুঝতে সক্ষম নয়। চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করে তিনি সেই স্থানকে পবিত্র করে দিয়েছেন। তিনি কৃষ্ণভক্তির প্রেমসমুদ্রে সদা ভাসমান এবং তাঁর শরীর সর্বদা অশ্র“-কম্প-পুলকাদি অতি দুর্লভ অষ্টসাত্ত্বিক বিকার দ্বারা সুশোভিত।

গঙ্গা মাতার বক্ষে পা লেগে যাবার ভয়ে তিনি গঙ্গায় স্নান করেন না। তিনি রাত্রিতে গঙ্গা দর্শনে যান কারণ দিনের বেলাতে অন্য লোকদের অপরাধমূলক কার্যকলাপ যেমন দাঁত মাজা, মুখ ধোওয়া, চুল কাটা ইত্যাদি দর্শন করে তিনি বড়ই মর্মাহত হতেন আর তাই তিনি রাতের বেলাই গঙ্গাদর্শনে যেতেন। চট্টগ্রামে তাঁর বাড়ি, আবার এখানেও একটি বাড়ি রয়েছে। তাঁকে হঠাৎ দর্শনে কেউ তাঁকে চিনতে সক্ষম হবে না বরং বিষয়ী বলে মনে করবে। তাঁর দর্শনে বঞ্চিত হয়ে আমি শান্তি পাচ্ছি না।” তিনি যখন নবদ্বীপে এলেন তখন শুধু মুকুন্দই তাঁকে চিনতে পারলেন কারণ তিনিও চট্টগ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। গদাধর পন্ডিত মুকুন্দের অন্তরঙ্গ সহচর ছিলেন। তাই মুকুন্দ তাঁকে বললেন - “এক অদ্ভুত দিব্য বৈষ্ণব এসেছেন। তুমি যদি দর্শন করতে চাও তাহলে চলো আমার সাথে।” তা শুনে গদাধর খুব উৎসাহিত হলেন এবং মুকুন্দের সাথে তাঁকে দর্শন করতে গেলেন। কিন্তু যখন গদাধর এসে তাঁকে দর্শন করলেন তখন তিনি বেশ নিরাশ হলেন কারণ তাঁর মনে হলো যেন কোন রাজকুমার বসে আছে সেখানে। কেউ তাঁর মাথার উপর এক বিশাল ছত্র ধরে আছে। যেই জমকালো বিছানায় তিনি বসে ছিলেন তাতে হেলান দেয়ার জন্য আরামদায়ক বালিশ ছিল এবং ভোগ-বিলাসের বিভিন্ন সামগ্রী সারা ঘরে সাজানো ছিল। দুই পরিকর তাঁর দুই পাশে দাড়িয়ে ময়ূর পাখা দিয়ে ব্যজন করছিল। তাঁকে দেখে মনে হচ্ছিল যেন কামদেবের মূর্ত বিগ্রহ। যারা তাঁকে চিনতেন না তাদের মনে হতো যেন তিনি একজন রাজকুমার। গদাধর পন্ডিত শৈশব থেকেই বিষয়ের প্রতি অনাসক্ত ছিলেন। তাই তিনি বিদ্যানিধি সম্বন্ধে সন্দেহের মনোভাব পোষণ করতে লাগলেন। গদাধরের মনের অবস্থা বুঝতে পেরে মুকুন্দ শ্রীমদ্ভাগবতম্ থেকে একটি শ্লোক উচ্চারণ করতে শুরু করলেন।
অহো বকী যং স্তন কালকূটং জিঘাংসয়াপায়য়দপ্য সাধ্বী। লেভে গতিং ধাত্র“্যচিতাং ততোহন্যং কং বা দয়ালুং শরণংব্রজেম।। (ভাঃ ৩/২/২৩)


“আহা! দুষ্টা পুতনা রাক্ষসী শ্রীকৃষ্ণের প্রাণ সংহার করার উদ্দেশ্যে কালকূট মিশ্রিত স্তন পান করিয়েও ধাত্রীে যোগ্য গতি লাভ করেছিল। তাঁর থেকে দয়ালু আর কে আছে যে, আমি তার শরণাপন্ন হব?” এই বর্ণনা শোনা মাত্রই পুন্ডরীক বিদ্যানিধি উন্মত্তের মতো ক্রন্দন করতে শুরু করলেন। তাঁর চোখ দিয়ে অঝোর ধারায় অশ্র“ বইতে লাগলো। মহা অষ্টসাত্ত্বিক বিকারগ্রস্থ হয়ে কৃষ্ণপ্রেম উন্মাদনায় তিনি ভূতলে পতিত হয়ে গড়াগড়ি দিতে লাগলেন। চারিদিকের সব দ্রব্যাদিতে তিনি পদাঘাত করতে লাগলেন এবং ঘরের সব বিলাসবহুল বস্তুগুলোকে ভাঙতে আর ছিড়তে শুরু করলেন। আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সারা ঘর যেন বিধ্বস্ত হয়ে গেল। পুন্ডরীক বিদ্যানিধির এই অত্যাদ্ভুত কৃষ্ণপ্রেমভক্তির লক্ষণগুলি দর্শন করে গদাধর পন্ডিত তাঁর অতি উন্নত আধ্যাত্মিক স্থিতি সম্পর্কে বুঝতে পারলেন এবং তাঁর ভক্তিভাবের প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করার জন্য অনুশোচনায় দগ্ধিভূত হতে লাগলেন। তাঁর এই অপরাধ থেকে মুক্তি পাওয়ার উদ্দেশ্যে তিনি পুন্ডরীক বিদ্যানিধির কাছ থেকে দীক্ষা নিতে মনস্থির করলেন। আর এইভাবেই শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর লীলায় এই দিব্য পিতা এবং কন্যার মিলন হল। শ্রীল পুন্ডরীক বিদ্যানিধি শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর অত্যন্ত প্রিয় পার্ষদ ছিলেন আর তাই আমাদের কাছেও তিনি অত্যন্ত প্রিয় এবং গভীর শ্রদ্ধার পাত্র। তিনি আমাদের জন্য একান্ত পূজনীয়! তাঁর শ্রীচরণকমণল সেবা করে আমরা আমাদের জীবন সার্থক করতে পারবো। তাঁর পবিত্র ধাম ও লীলাস্থলীর সেবা করার সুযোগ পাওয়াটা সত্যিই আমাদের জন্য পরমেশ্বর ভগবানের এক বিশেষ কৃপা। 



 #ekadashi24 #harekrishna --- #jagannath #jaganathpuri #devotion #rathayatra #odisha #puri #traveller_india #travelmood #travel #lordjagannath #travelphotography #travelblogger #love #nikon #incredibleindia #tourism #india #indianphotography #portraiture #portraitmood #portraitphotography #portrait #boy #divine #coloursofindia #jagannathpuri #jaijagannath #puri #lord #lordjagannath

Amit paul Akas

hi! I am Amit paul akas. I am a qualified Professional graphic designer. Design is a huge part of my life and I work hard to produce the highest quality, effective, innovative, timeless, designs that my clients will love and I would like to work with you! , I'm studying Diploma in Engineering at Moulvibazar Polytechnic Institute. #amitpaulakas #Amit_paul_akash .

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If you have any doubts. please let me know.

নবীনতর পূর্বতন

other blog

Youtube Channel Image
sriRamayanaudio Subscribe To listen Valmiki Ramayan
Subscribe