হরেকৃষ্ণ, নিজে একাদশী মহাব্রত পালন করুন এবং অন্যকে একাদশী মহাব্রত পালন করতে উৎসাহিত করুন। নোটিশঃএকাদশী২৪” সনাতন  ধর্মীয় বিষয়ক একটি মুক্তকোষ।এখানে সনাতন  ধর্মীয় গুরুত্বপূর্ণ সকল বিষয় সংরক্ষণ করে রাখা হয়।আপনিও আপনার চারপাশের সনাতন  ধর্মীয় যেকোন বিষয় লিখে পাঠিয়ে দিন সম্পাদক বরাবর।আপনিও হয়ে যান একাদশী২৪’ ত্রর একজন গর্বিত সংগ্রাহক।মেইলঃ ekadashi24team@gmail.com।শুভকামনা সাইটটি ভিজিট করার জন্য।

সনাতন ধর্মে স্বর্গ ও নরক, নরক কত প্রকার ও কি কি?

 
 
 শতসহস্র নরককুন্ড 
   
 জেনে নিন ২৮টি নরকের বর্ণনা 
 শ্রীভগবদ্গীতায় (৩/২৭) উল্লেখ করা হয়েছে-  
 প্রকৃতে ক্রীয়মাণানি গুণৈঃ কর্মাণি সর্বশঃ। 
 অহংকার বিমূঢ়াত্মা কর্তাহমিতি মন্যতে।। 
অর্থাৎ "প্রকৃতিতে সবকিছুই সম্পাদিত হয় গুণ এবং কর্ম অনুসারে, কিন্তু অহংকারের দ্বারা বিমোহিত হয়ে জীব নিজেকে কর্তা বলে অভিমান করে।"
 মূর্খ মানুষ মনে করে যে, সে কোনো আইনের অধীন নয়। সে মনে করে, ভগবান বা কোনো নিয়ন্তা নেই এবং সে তার খেয়ালখুশি মতো যা ইচ্ছা তাই করতে পারে। এভাবে সে বিভিন্ন পাপকর্মে লিপ্ত হয় এবং তার ফলে প্রকৃতির নিয়মে তাকে জন্ম-জন্মান্তরে বিভিন্ন নারকীয় পরিবেশে  দন্ডস্বরূপ যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। তার এ যন্ত্রণা ভোগের মূল কারণ, সে মুর্খতাবশত নিজেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন বলে মনে করে, যদিও সে সর্বদাই জড়াপ্রকৃতির কঠোর নিয়মের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এসমস্ত নিয়ম কার্য করে প্রকৃতির গুণের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে এবং তাই প্রত্যেকে তিনিটি গুণের বিভিন্ন প্রকার প্রভাবের অধীনে কর্ম করে। তার কর্ম অনুসারে সে এজীবনে অথবা পরবর্তী জীবনে বিভিন্ন প্রকার ফল ভোগ করে। ধার্মিকেরা নাস্তিকদের থেকে ভিন্নভাবে আচরণ করে, তাই তারা যে কর্মফল ভোগ করে তা-ও ভিন্ন।  
 
 গুণ ও কর্ম অনুসারে স্বর্গ ও নরক ভোগ 

 যারা সত্ত্বগুণে কর্ম করে, তারা ধার্মিক এবং সুখী হয়, যারা রজোগুণে কর্ম করে, তারা সুখ ও দুঃখ দুই-ই ভোগ করে, আর যারা তমোগুণের দ্বারা প্রভাবিত, তারা সর্বদাই দুঃখী এবং তারা পশুর মতো জীবনযাপন করে। বিভিন্ন মাত্রায় বিভিন্ন গুণের দ্বারা প্রভাবিত হওয়ার ফলে জীবের গতির তারতম্য হয়।  
 পূর্ণকর্মের ফলে যেমন স্বর্গভোগ হয়, তেমনি পাপকর্মের ফলে নরকভোগ হয়। তমোগুণের প্রভাবে মানুষ পাপকর্মে লিপ্ত হয় এবং তাদের অজ্ঞানের মাত্রা অনুসারে তাদের নারকীয় জীবনের বিভিন্ন স্তর প্রাপ্ত হয়। কেউ যদি প্রমাদবশত তামসিক আচরণ করে, তাহলে তাকে অল্প কষ্ট ভোগ করতে হয়। কেউ যদি জ্ঞানবশত পাপকর্ম করে, তাহলে তাকে আরো বেশি নরক যন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। আর যারা নাস্তিকতাবশত পাপকর্ম করে, তাদের সবচেয়ে বেশি নরকযন্ত্রণা ভোগ করতে হয়। অনাদিকাল ধরে জীব সহস্র নরকগতি প্রাপ্ত হয়।  
 
 কর্মের সাক্ষ্মী কে? 

 চেতনার বিবর্তনক্রমে জীবাত্মা মনুষ্যদেহ লাভ করে। ভগবান মানুষকে ভালোমন্দ বিচারবোদ দান করে থাকেন। মানুষ তার স্বতন্ত্র ইচ্ছাক্রমে কর্মক্ষেত্রে সদাচার বা কদাচার করতে থাকে। মানুষের সমস্ত কর্মের সাক্ষী চৌদ্দ জনের নাম মহাভারতে আদি পর্বে উল্লেখ রয়েছে। যথা- 
 (১) সূর্য, 
 (২) চন্দ্র, 
 (৩) বায়ু, 
 (৪) অগ্নি, 
 (৫) আকাশ, 
 (৬) পৃথিবী, 
 (৭) জল, 
 (৮) দিবা, 
 (৯) নিশা, 
 (১০) ঊষা, 
 (১১) সন্ধ্যা, 
 (১২) ধর্ম, 
 (১৩) কাল এবং পরমাত্মা।  
 সারা বিশ্বে সবাইকে ফাঁকি দিয়ে আমরা অনেক কিছু পাপ কর্ম করতে পারি, কিন্তু এসকল দেবতাদের কাউকে ফাঁকি দেওয়া যায় না। আবার, আমাদের বহু সৎ কর্মের হিসাব এই বিশ্বে কেউ না রাখলেও তাঁরা সাক্ষী থাকেন। এমনকি সমস্ত দেবতাকেও যদি কখনো সম্ভব হয়ে থাকে, কোনোকিছু তাদের আড়ালে থাকার বা করার মতো, তবুও কাল কিংবা সর্বোপরি পরমাত্মাকে আড়াল করে কোনোকিছু করা সম্ভব নয়।  
 
 তিন প্রকার পাপ 
 পাপ তিন প্রকার। 
 যথা- 
  (১) শারীরিক পাপঃ জীবহিংসা, চুরি, পরস্ত্রী সঙ্গ ইত্যাদি।  
 (২) বাচিক পাপঃ অসৎ প্রলাপ, নিষ্ঠুর বাক্য প্রয়োগ, পরদোষ কীর্তন, মিথ্যা ভাষণ ইত্যাদি।  
 (৩) মানসিক পাপঃ পরের দ্রব্যে লোভ, পরের অনিষ্ট চিন্তা, বেদবাক্যে অশ্রদ্ধা ইত্যাদি। 
 এই ত্রিবিধ পাপ সযত্নে এড়িয়ে চললে মানুষ ইহলোকে ও পরলোকে সুখী হতে পারে। শ্রীভীষ্মদেব যুধিষ্ঠির মহারাজ কে এই নির্দেশ দিয়েছিলেন। (মহাভারত অনুশাসন পর্ব ১৩ অধ্যায়)  
 
 নরকের অবস্থান কোথায়?  

 জনৈক স্বনামধন্য বাঙালি সাহিত্যিক বলেছেন-  
 "কোথায় স্বর্গ? কোথায় নরক? কে বলে তা বহুদূর?  
 মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরাসুর।" 
 এ কবিতাংশের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বুঝতে না পেরে অল্পবুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তিরা মনে করে যে, মৃত্যুর পর মানুষের স্বর্গে বা নরকে গমনের ধারণাটি ভ্রান্ত। কিন্তু, কবি এখানে বলেননি যে, পরকাল বা স্বর্গ-নরক বলে কোনো স্থান নেই। প্রকৃতপক্ষে, তিনি স্বর্গ নরক সম্বন্ধে এখানে কেবল আংশিক ধারণা দিয়েছেন। বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে বৈদিক শাস্ত্রে। শ্রীমদ্ভাগবতে (৩.১০.৮) বলা হয়েছে, ব্রহ্মান্ডের অভ্যন্তরস্থ গর্ভোদকশায়ী বিষ্ণুর নাভিপদ্মজাত ব্রহ্মা পদ্মকর্ণিকাতে প্রবেশ করে একে প্রথমে উর্ধ্বলোক, মধ্যলোক (ভূলোক) এবং অধঃলোক- তিনটি স্তরে, তারপর চৌদ্দটি স্তরে ভাগ করেন; যাকে বলা হয় চতুর্দশ ভুবন-দ্বিসপ্তধা।  
 
 উল্লেখ্য যে, একটি স্তরে এক বা একাধিক গ্রহলোক বিদ্যমান। এই চতুর্দশ ভুবনের মধ্যে পৃথিবীসহ উপরে রয়েছে সাতটি লোক- ভূ, ভূব, স্বর্গ, মহ, জন, তপ ও সত্য বা ব্রহ্মলোক এবং পৃথিবীর নিচে রয়েছে সাতটি লোক- অতল, বিতল, সুতল, তলাতল, মহাতল, রসাতল ও পাতাল। অর্থাৎ, পৃথিবীর অবস্থার স্বর্গ ও নরক গৃহের মাঝামাঝি। তাই, এখানে স্বর্গ ও নরক উভয় গ্রহলোকের প্রভাবই বিদ্যমান এবং কলিপূর্ব যুগত্রয়ে দৈব ও আসুরিক গুণ পৃথকভাবে পৃথক ব্যক্তির মধ্যে অবস্থান করলেও, বিশেষত এই কলিযুগে একই মানুষের মাঝে স্বর্গ-নরক, মানুষেতে সুরাসুর।  
 
 ত্রিলোকের অন্তরালে অবস্থিত। দক্ষিণদিকে ভূমন্ডলের অধঃভাগে এবং গর্ভোদক সমুদ্রের উপরিভাগে নরক গ্রহের অবস্থান। এ প্রসঙ্গে শ্রীল প্রভুপাদ বলেন, "পাতাল লোকের নিচে নরক; আর ব্রহ্মান্ডের তলদেশে গর্ভোদক সমুদ্র। তাই নরক গ্রহের অবস্থানটি হচ্ছে পাতাললোক ও গর্ভোদক সমুদ্রের মধ্যবর্তী স্থানে অবস্থিত।"  
 
 পাপাচারী মানুষ যখন স্থুল দেহ ত্যাগ করে, তখন যমদূতেরা তার সূক্ষ্ম দেহকে পাশবদ্ধ করে যমপুরীতে নিয়ে যায়। পৃথিবী থেকে যমপুরী অর্থাৎ নরক গ্রহের দূরত্ব ৮৬ হাজার যোজন বা ৭ লক্ষ ৯২ হাজার মাইল। অর্থাৎ ১১ লক্ষ ৮৮ হাজার কিলোমিটার। মহাভারতে বলা হয়েছে, ষড়শীতি-সহস্রযোজন-বিস্তীর্ণ মার্গ। মাত্র কয়েক মুহূর্তের মধ্যে অতি দ্রুতগতি যমদূতেরা পাপাত্মাকে সেই স্থানে নিয়ে যায়। নরকের যম পুরীর নাম হচ্ছে সংযমনী। 
শ্রীসূর্যদেবের পুত্র ধর্মরাজ যম নরকের অধিপতি।

                              হরিবল!🙏🏻
@ekadashi24 
একাদশী

হরেকৃষ্ণ♥ নিজে একাদশী মহাব্রত পালন করুন এবং অন্যকে একাদশী মহাব্রত পালন করতে উৎসাহিত করুন #ekadashi24

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

If you have any doubts. please let me know.

নবীনতর পূর্বতন

other blog

Youtube Channel Image
sriRamayanaudio Subscribe To listen Valmiki Ramayan
Subscribe